হিলি চারমাথা থেকে ছয় কিলোমিটার পূর্বে ছাতনী গ্রাম। গ্রামটি পেরিয়ে একটু সামনে গেলেই আশরাফ ফার্মস। স্থানীয় সৌখিন খামারি মাহফুজার রহমান বাবু এ খামারটি গড়ে তুলেছেন। নিবিড় পরিচর্যা এবং মমতায় চার বছর ধরে তিনি গরুগুলো লালন পালন করছেন।
তার খামারের সাদা-কালো রঙের একটি গরুর নাম রাখা হয়েছে বিন লাদেন। ফ্রিজিয়ান জাতের লাদেনের উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, লম্বায় সাড়ে ১১ ফুট। প্রায় ১ হাজার ২০০ কেজি ওজনের এ লাদেনের দাম হাঁকা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। এটি যে ক্রেতা কিনবে তাকে একটি দেশীয় ষাঁড় ফ্রি দেয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন এ খামারি।
শুধু লাদেন নয়, আলোচনায় উঠে এসেছে রাজা মশাই, সাদ্দাম ও গাদ্দাফিও। এ তিনটি গরুর দাম ধরা হয়েছে আট লাখ টাকা করে। বাবু তার খামারে ফ্রিজিয়ান, ব্রাহাম, সিন্ধিসহ বিভিন্ন জাতের এ গরুগুলো লালন-পালন করছেন।
বাবু বলেন, ‘চার বছর আগে আমার খামারে ফ্রিজিয়ান গাভী থেকে জন্ম নেয় সাদা-কালো বাছুরটি। এখন তার বয়স চার বছর। পরের বছর পাকিস্তানি সিন্ধি ও ব্রাহাম জাতের দুটি বাছুরও কেনা হয়। এরপর থেকেই সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতি ও প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে যত্ন সহকারে লালন-পালন করছি। সাদা-কালো রঙের ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টির নাম দিয়েছি বিন লাদেন। অন্যগুলোর নাম দেয়া হয়েছে রাজা মশাই, সাদ্দাম ও গাদ্দাফি। এ তিনটি গরুর ওজন বিন লাদেনের চেয়ে কম হলেও দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। এ পর্যন্ত তিনটি গরুর খাবারে ব্যয় হয়েছে প্রায় ছয় লাখ টাকা। করোনার কারণে ভালো দাম পাওয়া নিয়ে সংশয়ে আছি। আমার আশা সারা দেশের সবচেয়ে বেশি ওজনের গরুগুলোর মধ্যে বিন লাদেনও জায়গা করে নেবে।’
‘বিন লাদেন, রাজা মশাই, সাদ্দাম ও গাদ্দাফিকে বিক্রির জন্য বিভিন্ন অনলাইন হাটে ছবি পাঠিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাইনি। আশা করছি ঈদের বাকি সময়ের মধ্যেই সাড়া পাব। অনলাইনে বিক্রি করতে না পারলে ঢাকার বাজারে তোলা হবে গরুগুলো,’ যোগ করেন বাবু।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. রতন কুমার ঘোষ বলেন, ‘আমরা সব সময় গরুগুলোর প্রতি নজর রাখি এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি। সৌখিন খামারি মাহফুজার রহমান বাবু একেবারেই প্রাকৃতিক ও নির্ভেজাল পদ্ধতিতে ষাঁড়গুলোকে লালন-পালন করেছেন। এগুলো দেখতেও দৃষ্টিনন্দন। তবে এবার কোরবানির ঈদে গরুর খামারিদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বাজারজাত করা। এ ধরনের বড় আকারের ষাঁড় সাধারণত ঢাকাসহ বাইরের ক্রেতারা কিনে থাকেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত খামারিরা কোনো সাড়া পাচ্ছেন না। আমরা চেষ্টায় আছি অনলাইনের মাধ্যমে আগ্রহী ক্রেতাদের কাছে পৌঁছাতে। খামারি তার গরু ঢাকায় নিয়ে যেতে চাইলে ট্রেনের মাধ্যমে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।’